• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

গৌরবের ৪০ বছরে ইবি

লালমনিরহাট বার্তা

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০১৮  

৪০ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে ১৭৫ একর জমিতে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। কুষ্টিয়া শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার, ঝিনাইদহ শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে শহুরে কোলাহল মুক্ত পাখি ডাকা ছায়াঘেরা অনন্য স্নিগ্ধতা ও সবুজের সমারোহে ক্যাম্পাসটির অবস্থান।

১৯৮১ সালের ৩১ জানুয়ারী তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক ড.এ.এন.এ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরীকে প্রথম উপাচার্য নিয়োগ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যলয়টি মাত্র ২টি অনুষদের অধীনে ৪টি বিভাগের মোট ৩০০ ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ৮টি অনুষদে ৩৩টি বিষয়ে ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। পড়াশোনা করছে ১২ হাজার ৮১২জন শিক্ষার্থী।

বিগত বছর গুলোতে পিছিয়ে পড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন নতুন এক স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বমানের করার জন্য এরইমধ্যে প্রায় সকল বিভাগ থেকে সেশনজট মুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

 

1.গৌরবের ৪০ বছরে ইবি

সেশনজটমুক্ত শিক্ষা কার্যক্রম ও আধুনিক পঠনপাঠন প্রক্রিয়া অনুসরণের সুবাদে এখনও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যখন সেশনজটের হাহাকার, সেখানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজটের জাঁতাকল থেকে মুক্ত। সেশনজট মোকাবেলায় কৃতিত্বের দাবিদার বর্তমান উপাচার্য ড. হারুন-উর রশিদ আসকারী এরইমধ্যে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসিত হয়েছেন।

অতীতে শুধুমাত্র সেশনজটের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের ভর্তি বাতিল করেছেন। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো খুজে পাওয়া দায়। দাঙ্গা-হাঙ্গামা আর বিভিন্ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কবলে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় ধ্বংসের দারপ্রান্তে পৌঁছেছিল। অস্থিরতার কারণে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা পিছিয়ে যেত, সৃষ্টি হতো সেশনজটের। এ সেশনজট দূর করাকে যেমন অসম্ভব বলে মনে হত তেমনি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্ন অনেকটাই বাধাগ্রস্থ হত।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করা ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী অলক কুমার দত্ত বলেন, আমরা যে সময় ভর্তি হই, তখন এখানে ছিল তীব্র সেশনজট। কিছু রাজনৈতিক ঘটনার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টিকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হতো। কোনো কোনো সময় ৩ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ থাকতো। কিন্তু সেশনজট মোকাবেলা করার জন্য কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

 

2.গৌরবের ৪০ বছরে ইবি

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগের সেশনজট প্রায় শূন্যের কোটায়। যেখানে ইংরেজি বিভাগের পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতো সেখানে এই বিভাগের বাৎসরিক পরীক্ষা সবার আগে শুরু হয়। সেশনজট মুক্ত করার পাশাপাশি ২০১৭-১৮ সেশনে আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ডেভেপলপমেন্ট স্টাডিজ ও সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার বিভাগ, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি ও ইনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি বিভাগ, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ চালু করা হয়।

উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-উর রশিদ আসকারীর প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্যই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান প্রশাসন। ৫ শত ৩৭ কোটি ৭ লক্ষ টাকার মেগাপ্রকল্পের আওতায় খুব শ্রীঘ্রই ক্যাম্পাসে ৯টি দশতলা ভবন ও ১টি কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান গবেষণাগার নির্মাণ এবং ১৮টি ভবনের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন ২য় পর্যায় শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের বি-ব্লক, শেখ রাসেল হলের এ-ব্লক, অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ এবং মেডিকেল সেন্টার ও গেস্ট হাউজের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ শেষ হয়েছে। এছাড়াও রবীন্দ্র-নজরুল কলাভবন, প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটরদের জন্য নির্মিতব্য ৫তলা আবাসিক ভবনের ৩য় তলা পর্যন্ত, ৫০০ কেভি সাবস্টেশন, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য নির্মিতব্য ১০তলা আবাসিক ভবনের ৫তলা পর্যন্ত ১ম পর্যায়ের নির্মাণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের উর্ধ্বমুখী ও আনুভূমিক সম্প্রসারণ প্রায় শেষের দিকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের বিভিন্ন রাস্তা মেরামত ও সংস্কার কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য পানির ফোয়ারা তৈরি করা হয়েছে এবং দৃষ্টিনন্দন লেক তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

 

3.গৌরবের ৪০ বছরে ইবি

এছাড়া পরিবহন সঙ্কট দূরীকরণে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন পুলে ৮টি এসি গাড়ি যুক্ত হয়েছে। এ বছর আরোও ৪টি গাড়ি যুক্ত হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. হরুন-উর রাশিদ আসকারী বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা ওয়ার্ল্ড ক্লাস ইউনিভার্সিটিতে রুপান্তর করতে চাই, সে জন্য এখন পঠনপাঠনের পাশাপাশি গবেষণাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গবেষণার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের গবেষণার দিকটিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলে আমাদের ৭০% আবাসিক সমস্যা সমাধান হবে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –