• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

যে কারণে সব দোয়া কবুল হয় না

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

দোয়ার শাব্দিক অর্থ ডাকা। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো প্রয়োজনে ডাকার অর্থে ব্যবহৃত হয়।

দোয়া ইবাদতের মগজতুল্য। সর্বাবস্থায় যারা মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। আল্লাহ আমাদের প্রতিটি দোয়াই কবুল করেন। কিছু দোয়ার ফলাফল তাড়াতাড়ি দেন, কিছু দোয়ার ফলাফল আখিরাতের জন্য জমা রেখে দেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা : গাফির, আয়াত : ৬০)

আরো উত্তম কিছু দেবেন বলে : কখনো কখনো দোয়ার ফলাফল দুনিয়াতে দৃশ্যমান হয় না। তবে এর বিনিময়ে মহান আল্লাহ মানুষকে আরো বহু গুণ উত্তম প্রতিদান দেন। সে দোয়ার মধ্যে যা চেয়েছিল, তা হয়তো তাকে সাময়িক কষ্ট থেকে রক্ষা করত, কিন্তু মহান আল্লাহ তাকে সাময়িক সুখটুকু না দিয়ে স্থায়ী সুখের ব্যবস্থা করে দেন। আতা ইবনে আবু রাবাহ (রা.) বলেন, ইবনে আব্বাস (রা.) আমাকে বলেন, আমি কি তোমাকে একজন জান্নাতি নারী দেখাব না? আমি বললাম, অবশ্যই। তখন তিনি বলেন, এই কালো রঙের নারী, সে নবী (সা.)-এর কাছে এসেছিল। তারপর সে বলল, আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত হই এবং এ অবস্থায় আমার লজ্জাস্থান খুলে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। নবী (সা.) বলেন, তুমি যদি চাও ধৈর্যধারণ করতে পারো। তোমার জন্য আছে জান্নাত। আর তুমি যদি চাও, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যেন তোমাকে আরোগ্য করেন। ওই নারী বলল, আমি ধৈর্যধারণ করব। সে বলল, ওই অবস্থায় আমার লজ্জাস্থান খুলে যায়, কাজেই আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন আমার লজ্জাস্থান খুলে না যায়। নবী (সা.) তাঁর জন্য দোয়া করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৫২)

দুনিয়া যেহেতু পরীক্ষাগার : দুনিয়া যেহেতু পরীক্ষাগার, তাই মানুষের ওপর বিভিন্ন বিপদাপদ ফিতনা-ফ্যাসাদ আসবেই। তাই এসব বিষয়ে কখনো কখনো মহান আল্লাহ তাত্ক্ষণিক দোয়ার ফলাফল দেবেন না। সাদ (রা.) তার পিতা সূত্রে বলেন, রাসুল (সা.) ....বলেন, আমি আমার প্রতিপালকের কাছে তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেছি। তন্মধ্যে তিনি আমাকে দুটি প্রদান করেছেন এবং একটি প্রদান করেননি। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা করেছিলাম, যেন তিনি আমার উম্মতকে দুর্ভিক্ষের দ্বারা ধ্বংস না করেন। তিনি আমার এই দোয়া কবুল করেছেন। তাঁর কাছে এ-ও প্রার্থনা করেছিলাম যে তিনি যেন আমার উম্মতকে পানিতে ডুবিয়ে ধ্বংস না করেন। তিনি আমার এই দোয়াও কবুল করেছেন। আমি তাঁর কাছে এ মর্মেও দোয়া করেছিলাম যে যেন মুসলিমরা পরস্পর একে অপরের বিপক্ষে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি আমার এই দোয়া কবুল করেননি। (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৫২)

অকল্যাণের দোয়া করলে : আবার কখনো কখনো কষ্টের শিকার হয়ে না বুঝে অকল্যাণকর বিষয়ে দোয়া করে বসে, মহান আল্লাহ দয়া করে তাদের সেই দোয়াগুলো কবুল করেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মানুষ অকল্যাণ কামনা করে; যেভাবে কল্যাণ কামনা করে; মানুষ তো প্রকৃতিগতভাবে খুব বেশি তাড়াহুড়াকারী। (সুরা : ইসরা, আয়াত : ১১)

গুনাহে অবিচলতা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো সমপ্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে। আর কোনো সমপ্রদায়ের জন্য যদি আল্লাহ অশুভ কিছু ইচ্ছা করেন, তবে তা রদ হওয়ার নয়। এবং তিনি ছাড়া কোনো অভিভাবক নেই। (সুরা : রাদ, আয়াত : ১১)

হারাম ভক্ষণ করলে : রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না।’ (মুসলিম, হাদিস : ২২৩৬)

এ ছাড়া বিভিন্ন হাদিসের ভাষ্যমতে ইখলাস, দোয়ার ফলাফল পেতে তাড়াহুড়া ও অমনোযোগের কারণেও কখনো কখনো মানুষের দোয়া কবুল হয় না। তাই আমাদের উচিত, যেসব কারণে দোয়া কবুল হয় না, সেগুলো ত্যাগ করে একনিষ্ঠভাবে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করা।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –