• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

যেসব ক্ষেত্রে গিবত করা জায়েজ 

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ অক্টোবর ২০২০  

গিবত আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা, দোষারোপ করা, অনুপস্থিত থাকা, পরোক্ষে নিন্দা, পরচর্চা করা, কুৎসা রটনা করা, পেছনে সমালোচনা করা। অন্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করা, কুৎসা রটনা করা, পেছনে সমালোচনা করা ইত্যাদি।
শরীয়তের পরিভাষায় গিবত বলতে বুঝায় কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে এমন কথা বলা যা শুনলে সে তা অপছন্দ করবে।
গিবত করার মাধ্যম (চোখের ইশারায়, অঙ্গভঙ্গিতে, শ্রবণে ও লিখনে গীবত): পরনিন্দা কেবল মুখের বাক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং চোখের ইশারায়, অঙ্গভঙ্গিতে, শ্রবণে ও লিখনের দ্বারাও গিবত হয়ে থাকে। সর্বপ্রকার গিবতই হারাম।

গিবত করা বা পরনিন্দা করা হারাম। এ কথাটি একজন সাধারণ মুসলমানও জানে। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের বা দলের গিবত বলা জায়েজ, এই কথাটা অনেকেই জানে না। যার কারণে গিবতকারী গিবতকারী বলে চিল্লা চিল্লি করে।

কিছু মানুষ এমন আছে যে, সে নিজে খারাপ, কিন্তু তার কারণে অন্যলোক ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। এমন লোকের অনুপস্থিতিতে তার নিন্দা করা যাবে না। করলে গিবত হবে।
কিছু লোকের চরিত্র এমন যে, সে নিজেও ধ্বংশ হয়েছে এবং অন্যকেও ধ্বংশ করতেছে। এমন লোকের ধ্বংশাত্বক ছোবল থেকে অন্যকে বাঁচানোর উদ্দ্যেশে তার খারাপ চরিত্রের কথা মানুষকে জানিয়ে দেয়া গিবতের অন্তর্ভুক্ত নয়।

যেমন: আপনার এলাকাতে একজন প্রশিদ্ধ ডাকাত আছে, তা ভাষা খুবই মিষ্টি। সে মিষ্টি কথার দ্বারা মানুষকে বশীভূত করে ফেলে এবং সুযোগমতো কৌশলে মানুষের অনিষ্ট করে। এমতাবস্তায় আপনি দেখলেন যে, আপনার ঘনিষ্ট একজন আত্নীয় তার খপ্পরে পড়ে যাবার উপক্রম। এখন আপনি কি করবেন? এখন আপনার একান্ত কর্তব্য হলো, ডাকাতের চরিত্রকে প্রকাশ করা। যদি না করেন তাহলে আপনার আত্নীয়ের সবকিছু ধ্বংশ করে দেবে। এই হলো সাধারণ ব্যাপার। আর যে দল বা গোষ্টি প্রতারনার ফাদ পেতে লাখ লাখ লোকের ঈমান আমল নষ্ট করছে তাদের মন্দ দিকগুলো সাধারণ জনগনের নিকট প্রকাশ করা ফরজ।
যেসব ক্ষেত্রে গিবত করা জায়েজ:

গিবতের ক্ষতিকর প্রভাবে ব্যক্তি থেকে সমাজের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে শধু ইসলাহের উদ্দেশ্যে ও নেকির আশায় জনকল্যাণার্থে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমালোচনা করা যায়। যেটা আসলে গিবত নয়। বরং সত্য তুলে। যেমন: 
(১) অত্যাচারীর অত্যাচার প্রকাশ করার জন্য। 
(২) সমাজ থেকে অন্যায় দূর করা এবং পাপীকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য। 
(৩) হাদিসের সনদ যাচাইয়ের জন্য। 
(৪) মুসলিমদেরকে মন্দ থেকে সতর্ক করার জন্য। 
(৫) পাপাচার ও বিদাত থেকে সাবধান করার জন্য। 
(৬) প্রসিদ্ধ নাম বলে তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য! যাতে করে লোকেরা এদের চিনতে পারে। (নববী, রিয়াযুছ ছালেহীন, ২৫৬ অনুচ্ছেদ, পৃঃ ৫৭৫; মুসলিম হা/২৫৮৯ ‘গিবত হারাম হওয়া’ অনুচ্ছেদ, নববীর ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –